RAM কি? RAM এর কাজ কি?
RAM কম্পিউটার এর একটি খুবই গুরত্বপূর্ণ অংশ। বর্তমানে প্রতিটি মানুষেরই কম্পিউটার বিষয়ে ভাল জ্ঞান থাকা অবশ্যেই প্রয়োজনীয়।
আজকাল প্রায় প্রতিটি বাসা বা অফিসেই ল্যাপটপ বা কম্পিউটার ব্যবহার করা হয়। আর এ জন্য কম্পিউপটার সমন্ধে বেসিক কিছু তথ্য আমাদের অবশ্যই দরকার। মানুষের যেমন হালকা ঠান্ডা বা জ্বর এর কারনে সে ডাক্তারের নিকট না গিয়ে নিজেই ওষুদের দোকান থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা নিতে পারে ঠিক তেমনি কম্পিউটার ব্যবহারকারীদেরও কম্পিউটার সমন্ধে বেসিক জ্ঞান থাকা অপরিহার্য। যদিও কম্পিউটার দীর্ঘদিন ব্যবহার করতে করতে বেসিক অনেক বিষয় মস্তিস্কে চলে আসে তবুও কিছু খুটিনাটি বিষয় জেনে রাখা ভাল।
RAM বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করার শুরুতে আমরা জেনে নেই RAM কি?
RAM একটি ইংরেজি শব্দ। এর পূর্ণরুপ হচ্ছে Random Access Memory (র্যান্ডম অ্যাক্সেস মেমোরি) সংক্ষেপে হলো র্যাম (RAM). সংক্ষেপে র্যাম (RAM) হচ্ছে এক ধরনের কম্পিউটারের উপাত্ত বা ডাটা সংরক্ষণের মাধ্যম। র্যাম থেকে যে কোন ক্রমে উপাত্ত “অ্যাক্সেস” করা যায়, এ কারণেই একে Random Access Memory বলা হয়। র্যামকে ভোলাটাইল মেমোরি বলা হয় কারণ এতে সংরক্ষিত তথ্য বিদ্যুত সংযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার পর আর থাকে না। এছাড়াও আরোও কিছু নন-ভোলাটাইল মেমোরি (যেগুলোতে বিদ্যুত চলে যাওয়ার পরও তথ্য মুছে যায় না) যেগুলো রক্ষনাত্মক দৃষ্টিতে র্যাম সেগুলো হলো রম, এক ধরনের ফ্লাশ মেমোরি যাকে নর-ফ্লাশ বলে।
র্যাম তৈরি হয়েছিল ১৯৫১ সালে এবং বানিজ্যিকভাবে বাজারে আসে ১৯৭০ সালে।
RAM (Random Access Memory) র্যাম (র্যান্ডম এক্সিস মেমোরি) হলো কম্পিউটারের একটি অস্থায়ী মেমোরি। অর্থ্যাৎ এতে যে কোনো তথ্য অস্থায়ীভাবে জমা থাকে।
যেমন বিষয়টি আমরা উদাহরণের সাহায্যে বুঝাতে পারি। ধরুন আপনি মাইক্রোসফট ওয়্যার্ড এ কিছু টাইপ করতেছেন। হয়তো আপনি প্রায় ১০-১৫ মিনিট টাইপ করেছেন। এখন প্রশ্ন হলো আপনি এই সময়ের মধ্যে শুধুমাত্র টাইপই করেছেন ফাইটি কোন নাম দিয়ে সেফ করেননি। ফাইলটি সেফ বা সংরক্ষণ না করার ফলে এটি HDD (Hard Disk Drive) বা এইচডিডি (হার্ড ডিস্ক ড্রাইভ) এ জমা বা সংরক্ষণ হয়নি। তাহলে ফাইলটি কোথায় জমা হলো।
ফাইলটি RAM (Random Access Memory) তে জমা আছে। অর্থ্যাৎ আপনি যখন কোন ফাইল এ কাজ করবেন তখন যদি উক্ত ফাইলটি সেফ বা সংরক্ষণ না করেন তাহলে ফাইলটি সয়ংক্রিয়ভাবে র্যাম এ জমা থাকে। এবং সেটি ততক্ষণ পর্যন্ত জমা থাকে যতক্ষণ আপনি কম্পিউটার বন্ধ করে না দিবেন বা ইলেকট্রিসিটি চলে গিয়ে কম্পিউটার বন্ধ হয়ে না যায়। বন্ধ হয়ে গেলে র্যাম থেকে ফাইল এর টাইপ করা তথ্যগুলো মুছে যায়। অবশ্য মাইক্রোসফট অফিস ওয়ার্ড এ অটো সেফ মুড অন করা থাকলে ইলেকট্রিসিটি চলে যাওয়ার পরও টাইপ করা তথ্যগুলো ফিরে আসে। কিন্তু এটি অন্ন্যান্য সফটওয়্যার এ হয় না।
তাহলে বিষয়টি আমারা পরিস্কার ভাবে বলতে পারি যে, র্যান্ডম এক্সিস মেমোরি হলো কম্পিউটারের একটি অস্থায়ী মেমোরি।
বর্তমানে র্যামকে পাঁচ ভাগে ভাগ করা হয়েছে। যথাঃ
১। SD RAM-Synchronous Dynamic (এসডি র্যাম)
২। DDR RAM- Double Data Rate (ডিডিআর র্যাম)
৩। DDR-2 RAM- Double Data Rate (ডিডিআর-২ র্যাম)
৪। DDR-3 RAM- Double Data Rate(ডিডিআর-৩ র্যাম)
৫। DDR-4 RAM- Double Data Rate (ডিডিআর-৪ র্যাম)
উপরোক্ত র্যামগুলো চেনার উপায়।
নিচে উপরোক্ত র্যামগুলো নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হলোঃ
১। SD RAM- Synchronous Dynamic (এসডি র্যাম): এটি কম্পিউটার এর প্রথম সংস্করণ। একটি ১৯৯২ সালে প্রথম তৈরি করা হয়। SD RAM এসডি র্যাম দেখতে অনেকটা নিচের চিত্রের মতোঃ
এই র্যাম চেনার জন্য সবচেয়ে সহজ উপায় হচ্ছে এর দুই পাশে কাটা থাকে। এবং এর কালো চিপগুলো অনেক বড় বড় থাকে।
এই র্যাম সাধারণত 16 Mega Byte (MB) থেকে শুরু হয়ে 512 Mega Byte (MB) পর্যন্ত হয়ে থাকে।
র্যাম এর সাইজ সাধারণত নিম্নভাবে হয়ে থাকে
16 MB
32 MB
64 MB
128 MB
256 MB
512 MB
SD RAM Pentium 1, 2, 3 কম্পিউটারে ব্যবহার করা হয়। এবং এটি অনেক আগের কম্পিউটারে ব্যবহার করা হয়। এখন এই প্রকার র্যাম নেই বললেই চলে। তবুও র্যাম সমন্ধে জানতে হলে আপনাকে সব গুলো র্যাম এর মডেল সমন্ধেই জানতে হবে।
SD RAM সাধারণ 66 MHz থেকে 256 MHz পর্যন্ত বাস (BUS) Speed হতে পারে। এই বাস স্পিড এর উপর র্যাম এর গতি নির্ভর করে। অর্থ্যাৎ র্যামের বাস স্পিড যত বেশি হবে র্যামের কার্যক্ষমতা তত বেশি হবে।
SD RAM এর কোম্পানিগুলো সাধারণত|
Samsung
Mitsubishi
Hyundai
Hynix
ইত্যাদি ব্রান্ডের হয়ে থাকে। একটা বিষয় আপনাদের বলে রাখি র্যাম সমন্ধে জানতে হলে আপনাকে র্যাম এর পুরো বিষয়টি প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত খুব ভালভাবে পরে আয়ত্ব করতে হবে। আর ছবিতে র্যাম দেখার পাশাপাশি সম্ভব হলে কম্পিউটার দোকানে গিয়ে প্র্যাকট্রিকালি দেখে আসতে পারেন। এতে করে আপনার জ্ঞান আরও সমৃদ্ধ হবে আশা করি। কারণ কম্পিউটার সমন্ধে বিস্তারিত জানতে হলে আপনাকে অবশ্যই প্রচুর পড়াশোনার পাশাপাশি ব্যবহারিক ভাবেও এর কাজ দেখতে হবে। তবেই র্যাম তথা কম্পিউটার এর যে কোন বিষয় সমন্ধে বিস্তারিত জানতে পারবেন।
২। DDR RAM- Double Data Rate Random Access Memory (ডাবল ডাটা রেট র্যান্ডম এক্সিস র্যাম) হলো র্যাম এর দ্বিতীয় সংস্করণ। এটি SD RAM এর পরের সংস্করণ। এটি 1998 সালে বাজারে আসে। DDR RAM ডিডিআর র্যাম দেখতে অনেকটা নিচের চিত্রের মতোঃ
এই র্যাম চেনার সবচেয়ে সহজ উপায় হচ্ছে এর এক দিকে কাটা থাকে। এবং এর কালো চিপগুলো বড় বড় থাকে। এবং চিপগুলো র্যাম এর এক পাশে বা দুই পাশেও থাকতে পারে। ডিডিআর র্যাম সাধারণত 64 Mega Byte (MB) থেকে শুরু হয়ে 1 Giga Byte (GB) পর্যন্ত হয়ে থাকে।
ডিডিআর র্যাম এর সাইজ সাধারণত নিম্নভাবে হয়ে থাকেঃ
64 MB
128 MB
256 MB
512 MB
1 GB (1024 MB)
DDR RAM (ডিডিআর র্যাম) এর বাস স্পিড (BUS Speed) সাধারণত 256 MHz থেকে 400 MHz পর্যন্ত হয়ে থাকে।
ডিডিআর র্যাম এর কোম্পানিগুরো সাধারণত নিম্ন নামের হয়ে থাকেঃ
Samsung
Hynix
Hyundai
Adata
ইত্যাদি ব্র্যান্ডের হয়ে থাকে। ডিডিআর র্যাম প্রধানত Pentium 4 কম্পিউটারে ব্যবহার করা হয়। এবং এগুলোর জন্য যে সকল মাদারবোর্ড এর প্রয়োজন হয় সেগুলো হলো 845, 865, 915 ইত্যাদি। DDR RAM দিয়ে সাধারণত টাইপের কাজ করা যায়। এতে ইন্টারনেট চলে কিন্তু গতি খুবই কম হয়। কারণ ইন্টারনেট চালানোর জন্য বেশি গতি সম্পন্ন র্যাম এর প্রয়োজন হয়।